লাইফস্টাইল

মস্তিষ্কের ক্ষতি করা কিছু নিরীহ অভ্যাস

মস্তিষ্কের ক্ষতি করা কিছু নিরীহ অভ্যাস

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, রাত ৯:৪২

অনেক সময় এমন কিছু অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যা প্রথমে নিরীহ মনে হয়। শারীরিক সুস্থতার প্রতি আমরা যতটা সচেতন, মস্তিষ্কের সুস্থতা ঠিক ততটা মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে না। তবে, আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস এবং পছন্দগুলির গভীরে গিয়ে দেখা যায় যে, সেগুলি আমাদের মস্তিষ্কের উপর একধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। চলুন, এমন কিছু অভ্যাস সম্পর্কে জানি যা গোপনে আমাদের ব্রেইনের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে:

১. ফোনের অত্যধিক ব্যবহার

ফোন আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আমরা সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রোল করি, মেসেজ চেক করি, এবং খবর পড়ি। কিন্তু এই দীর্ঘ স্ক্রীন টাইম মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অত্যধিক ফোন ব্যবহার মনোযোগের সময়কে প্রভাবিত করে এবং তথ্যের অতিরিক্ত লোড মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহারের ফলে ঘুমের গুণমান কমে যায় এবং এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও মানসিক স্বচ্ছতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ফোন-মুক্ত সময় এবং ঘনঘন বিরতি নিলেই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত হতে পারে।

২. পুষ্টিকর নয়, লোভনীয় খাবার খাওয়া

চিনিযুক্ত, ভাজা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবার রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে প্রদাহ বৃদ্ধি পায় এবং এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। ২০১৫ সালে নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, চিনি এবং ট্রান্স চর্বি মস্তিষ্কের নিম্ন গুণমান এবং স্মৃতিশক্তির অবনতি ঘটায়। তাই, লোভনীয় খাবার বাদ দিয়ে সবুজ শাক-সবজি, বাদাম এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা জরুরি।

৩. নতুন কিছু না শেখা

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত রাখতে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ, কৌতূহল এবং নতুন কিছু শেখা প্রয়োজন। যদি আমরা নতুন কিছু শিখতে না পারি, তবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে শুরু করে। এটি অব্যবহৃত পেশীর মতো কাজ করতে থাকে। নিয়মিত পড়া, নতুন ভাষা শেখা, বা মস্তিষ্কের গেম খেলা মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ রাখে।

৪. দীর্ঘ সময় বসে থাকা

শারীরিক কার্যকলাপ শুধুমাত্র শরীরের জন্যই নয়, মস্তিষ্কের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত নড়াচড়া মস্তিষ্কে রক্ত ​​​​প্রবাহ বাড়ায়, যা স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মেজাজের উন্নতি ঘটায়। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। তাই কিছুক্ষণ পরপর হাঁটাচলা বা ডেস্ক ব্যায়াম করা মস্তিষ্ক ও শরীর দুটোই সক্রিয় রাখে।

উপসংহার

মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ এবং মানসিক চ্যালেঞ্জের প্রয়োজন। আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাসের মধ্যে যে অল্প কিছু পরিবর্তন আনলেই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং সুস্থতা উন্নত করা সম্ভব।