গোপালগঞ্জের বিল ও জলাশয়গুলোতে শীত মৌসুমে আসা অতিথি পাখি এখন অসাধু শিকারিদের জন্য সহজ শিকারে পরিণত হয়েছে। বিষটোপ, জাল ও বড়শি দিয়ে শিকার করা পাখি স্থানীয় হাট-বাজার থেকে শুরু করে মুঠোফোনে অর্ডার দিলেও ক্রেতার ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন অসংখ্য পাখি নিধন করা হচ্ছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রতি বছর নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গোপালগঞ্জের পিঠাবাড়িয়া, কাজুলিয়া, বাজুনিয়া, বাঘাযুর, বেতাঙ্গীর বিলসহ চিংড়ি ঘের এলাকায় অতিথি পাখির কলরবে মুখর হয়ে ওঠে। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বালিহাঁস, কালকোচ, ডুঙ্কর, পানকৌড়ি, কাদা খোচা, মদনটাকসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি এখানে আসে। তবে এদের নিরাপদ বিচরণ এখন শিকারিদের ফাঁদের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
শিকারিরা প্রযুক্তির ব্যবহার করে অভিনব উপায়ে পাখি শিকার করছে। ডাউনলোড করা পাখির ডাক পোর্টেবল সাউন্ড-বক্সে বাজিয়ে পাখিদের ফাঁদে আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এসব ফাঁদে প্রতিদিন শত শত পাখি আটকা পড়ে।
শিকার হওয়া পাখি বলাকুর ও রঘুনাথপুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি জোড়া পাখির দাম প্রজাতি ভেদে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা মুঠোফোনে অর্ডার দিলে মোটরসাইকেলে করে পাখি তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে উদ্বিগ্ন। তারা জানান, পাখি নিধন অব্যাহত থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। পাখিদের অভাব জলাশয়ের খাদ্য শৃঙ্খলে প্রভাব ফেলতে পারে।
অতিথি পাখি নিধন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি পাখি শিকার বন্ধে বিশেষ টহল দল গঠন করা প্রয়োজন।
মতামত