অর্থনীতি

চলনবিলে বিনা চাষে ৩৫ লাখ মণ রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা

চলনবিলে বিনা চাষে ৩৫ লাখ মণ রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা

ছবি : নারী-পুরুষ মিলে নরম মাটিতে রসুনের কোয়া রোপণ করছেন


প্রকাশিত : ৬ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ১:৪৩ আপডেট : ৬ ডিসেম্বর ২০২৪, বিকাল ৩:২৪

দেশের সর্ববৃহৎ চলনবিলে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন ফসলের চাষ। এ সময় সবচেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিল পাড়ের কৃষকরা। বর্তমানে বিনা চাষে রসুন রোপণের কর্মযজ্ঞে মেতে উঠেছেন নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার কৃষকরা।

জানা গেছে, প্রতিবছরই চলনবিল অঞ্চলে বন্যার কারণে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে পানি নেমে গেলে কৃষকরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ফাঁকা জমিতে রসুনের চাষ শুরু করেন। বিশেষ করে নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, পাবনার ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিনা চাষে রসুন চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের নাদোসৈদপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম প্রামাণিক জানান, প্রতি কেজি রসুনের বীজ ২২০ টাকায় কিনে পলি জমা কাদামাটিতে বিনা চাষে রোপণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় খরচ কম হলেও পরিশ্রম বেশি। একজন শ্রমিকের মজুরি ৪০০-৪৫০ টাকা। তবে ভালো ফলন হলে লাভও হয় অনেক।

আরেক কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কম খরচে রসুন চাষ করি। এবার ১২ বিঘা জমিতে রসুন লাগিয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছি।

সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, রসুন মানবদেহে উপকারী। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাসে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, চলনবিলাঞ্চলে রসুন একটি অর্থকরী ফসল। কৃষকদের চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা থেকে ৩৫ লাখ মণ রসুন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

বিনা চাষে রসুন চাষের এই উদ্যোগ কৃষকদের জন্য যেমন লাভজনক, তেমনই দেশের খাদ্য উৎপাদনেও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে।