বাংলাদেশের শুল্ক প্রশাসনের ইতিহাসে এক অনন্য নাম সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। তার কর্মজীবন সততা, পেশাদারিত্ব এবং দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। শুল্ক প্রশাসনে দীর্ঘদিন ধরে তার অবদান শুধু দৃষ্টান্তমূলক নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণা। বর্তমানে তিনি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার কর্মদক্ষতায় শুল্ক প্রশাসন একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে।
৩৫০০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা: সাহসী পদক্ষেপ
চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সৈয়দ মুশফিকুর রহমান একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দেশের রাজস্ব খাতকে রক্ষার জন্য অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দেন। দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে তিনি ৩৫০০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা করেন।
এটি ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সাধারণত এ ধরনের প্রভাবশালী শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত হন। কিন্তু সৈয়দ মুশফিকুর রহমান তার দায়িত্ববোধ ও সততার কাছে সবকিছুকে উপেক্ষা করে এ মামলাটি করেন। এটি ছিল দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে এক সাহসী পদক্ষেপ। শেখ হাসিনার শাসনামলে তার এই পদক্ষেপ কেবল শুল্ক প্রশাসনের স্বচ্ছতাই নিশ্চিত করেনি, বরং দেখিয়েছে, সঠিক নেতৃত্বের অধীনে শুল্ক প্রশাসন কতটা প্রভাবশালী হতে পারে।
চট্টগ্রামে রাজস্ব বৃদ্ধিতে অনন্য অবদান
চট্টগ্রামে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাজস্ব সংগ্রহে নতুন উচ্চতা অর্জন করেছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রমে আরও গতি এসেছিল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তিনি শুধুমাত্র টাকার অঙ্কে রাজস্ব বাড়ানোর দিকেই মনোযোগ দেননি, বরং সেবামূলক কার্যক্রমেও অবদান রেখেছেন।
তার উদ্যোগে সাধারণ জনগণের সাথে শুল্ক বিভাগের সরাসরি যোগাযোগ বাড়ে। এটি শুল্ক প্রশাসনের স্বচ্ছতা বাড়ানোর পাশাপাশি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করে। তিনি একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছিলেন, যেখানে শুল্ক আদায়ের প্রক্রিয়া সহজ, কার্যকর এবং দুর্নীতিমুক্ত ছিল।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সাফল্যের কাণ্ডারি
বর্তমানে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে সৈয়দ মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে চোরাচালান প্রতিরোধ এবং রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে একের পর এক সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তার কৌশলগত নেতৃত্ব এবং সঠিক পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বিশেষ করে, চোরাচালানের বড় চক্র ভেঙে দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন যে, শুল্ক প্রশাসনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দেশকে আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। তার তৎপরতা শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নকেই ত্বরান্বিত করেনি, বরং জাতীয় নিরাপত্তাকেও সুরক্ষিত করেছে।
একজন দূরদর্শী এবং সৎ নেতা
তার সততা, নিষ্ঠা এবং কর্মদক্ষতা তাকে সহকর্মী ও অধীনস্থদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন করে তুলেছে। তার প্রতিটি কাজের মধ্যে সততার প্রতিফলন ঘটে, যা তাকে দেশের শুল্ক প্রশাসনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত করেছে।
ভবিষ্যতের দিশারি
সৈয়দ মুশফিকুর রহমানের মতো দক্ষ, সাহসী এবং প্রতিশ্রুতিশীল ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বে শুল্ক প্রশাসন ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবে। তার সাহসিকতা, দূরদর্শিতা এবং সততার মিশ্রণ আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা।
তার আদর্শিক নেতৃত্ব প্রমাণ করে, একজন সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তির নেতৃত্বে দেশের প্রশাসন কেবল উন্নতি করতেই পারে না, বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠতে পারে
মতামত