নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সোনালি মুকুল, বাতাসে ভাসছে মিষ্টি সুগন্ধ। আম উৎপাদনের লক্ষ্যে এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে সাপাহারের সদর ইউনিয়ন, তিলনা ও শিরন্টি ইউনিয়নের আমবাগানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গাছেই মুকুল এসেছে। কিছু বাড়ির আঙিনার গাছেও ফুটেছে আমের মুকুল।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় গাছে দ্রুত মুকুল এসেছে, ফলে কিটনাশকের ব্যবহারও তুলনামূলক কম হচ্ছে।
সাপাহার সদর ইউনিয়নের আমচাষি আশরাফুল হক বলেন, এ বছর ১৫০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করেছি। বাগানে পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে, পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছি।
এদিকে, পিছলডাঙ্গা গ্রামের আরেক চাষি মমিনুল হক জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের মুকুল ভালোভাবে বিকশিত হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে এবার কীটনাশকের ব্যবহার কম লাগছে।
সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৯,২৮০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এখন আমের মুকুল সংরক্ষণের সময়। প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড এবং ২ গ্রাম কার্বেনডাজিম ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে আমের মুকুলে পাউডারি মিলডিউ ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। এজন্য কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম আহমেদ বলেন, সাপাহার অঞ্চলের আম রপ্তানির পথ সুগম করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি ওয়্যারহাউজ (প্যাকিং হাউজ) স্থাপনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আমচাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং এলাকার কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
নওগাঁর সাপাহার উপজেলা দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী এলাকা। এখানকার আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। তাই আমের পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় চাষিরা।
মতামত