বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেলেও চাষিরা তাতে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না, ফলে তারা ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন। এবারের মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বেশি দেখে যেসব চাষি আগামজাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন, তাদের অনেকেই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে তারা আগামীতে পেঁয়াজ চাষ করবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তিত।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার চাষিরা জানান, প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হচ্ছে ৯০-১ লাখ টাকা, অথচ বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৭০০ টাকা মণ দরে। এর ফলে তারা লোকসান গুনছেন। বর্গা চাষিদের খরচ আরও বেশি, প্রায় ২ হাজার টাকা মণ। তাদের দাবি, ন্যায্যমূল্য না পেলে তারা পুঁজি হারানোর আশঙ্কা করছেন।
সালথা উপজেলার পুরুরা গ্রামের চাষি সবুজ মোল্যা জানান, তিনি ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে উন্নত জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ফলন আশানুরূপ হলেও খরচের টাকা উঠবে কিনা তা নিয়ে তিনি আশঙ্কিত। তিনি সরকারের কাছে পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য হিসেবে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা দাবি করেছেন।
এছাড়া একই গ্রামের চাষি মো: নাজিম মোল্লা বলেন, এই বছর তিনি দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন, তবে ফলন কম এবং দামও কম, ফলে লোকসানের আশঙ্কায় আছেন।
উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পেঁয়াজচাষি নজরুল রহমান জানান, তিনি পৌনে তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন এবং বর্তমানে ৭০ মন পেঁয়াজ প্রতি বিঘায় পেয়েছেন। তার মোট খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তবে তিনি উদ্বিগ্ন যে সব পেঁয়াজ বিক্রি করে তিনি পুরো টাকা তুলতে পারবেন কিনা।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। কৃষকদের ধারণা, রপ্তানি চালু হলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে এবং কৃষকরা আরও লোকসানের সম্মুখীন হবে। এই কারণে স্থানীয় কৃষকরা সরকারের কাছে আরো ৩-৪ মাস পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর চাষিরা ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি (১২ হাজার হেক্টর) জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে এবং চলতি মৌসুমে ২ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।
মতামত