কৃষি

চলনবিলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দামে খুশি কৃষকরা

চলনবিলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দামে খুশি কৃষকরা

প্রকাশিত : ১১ মে ২০২৫, রাত ১১:১৭

শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিল অঞ্চলে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসব। চারদিকে এখন শুধু সোনালি শীষের সমারোহ। হিমেল বাতাস আর রোদমাখা মাঠে দোল খাচ্ছে ধান, সেই দৃশ্যে ফিরে আসে গ্রামীণ বাংলার চিরায়িত রূপ।

নাটোরের সিংড়া উপজেলাসহ চলনবিলজুড়ে এবারের বোরো মৌসুমে ইরি ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের অনুপস্থিতিতে কৃষকরা যেমন খুশি, তেমনি ধানের বাজারমূল্য ভালো থাকায় তারা লাভবানও হচ্ছেন।

চলনবিলের ডাহিয়া গ্রামের কৃষক কালাম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। শুধু বাতাসে কিছু ধান পড়ে গিয়েছিল, শ্রমিক সংকটে সমস্যা হচ্ছিল, তবে এখন শ্রমিক পেয়ে স্বস্তিতে ঘরে তুলছি।

একই গ্রামের কৃষক বাহার মোল্লা, কাফি ও সিদ্দিক হোসেন বলেন, আমরা যে খরচ করেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি দাম পাচ্ছি। তাই এবার ভালো লাভ হচ্ছে।

সাঁতপুকুরিয়া ইউনিয়নের তাজপুর শহরবাড়ি গ্রামের আমিন আলী জানান, আমি ৬০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, এর মধ্যে ১৩ বিঘা ধান কর্তন করেছি। ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাচ্ছি। এভাবে চললে এবার বড় লাভ হবে।

কৃষকদের পাশাপাশি ধান কাটতে আসা শ্রমিকরাও সন্তুষ্ট। পাবনা থেকে আসা শ্রমিক রহিম বলেন, এবার ধানও বেশি, দামও বেশি। আমরাও পরিশ্রমের সঠিক মজুরি পাচ্ছি। এ আয়ে পুরো বছর পরিবার নিয়ে চলা যায়।

ধানের বাজারে ইতোমধ্যেই ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। ধান ব্যবসায়ী আঃ মতিন মৃধা জানান, আমরা এখন মিনিকেট ধান ১৫০০ টাকা মন দরে কিনছি। গতবারের তুলনায় দাম বেশি।

সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলন ও বাজারদর দুইই ভালো। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা পোকামাকড়ের প্রভাব পড়েনি। কৃষকেরা এবার নিশ্চিতভাবেই লাভবান হবেন।

এছাড়া কৃষক পরিবারের সদস্যরাও বসে নেই। বাড়ির বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশু-কিশোররা পর্যন্ত ধান কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। কেউ ধান কাটছে, কেউ মাড়াই করছে, আবার কেউ ধান সিদ্ধ করে চালে রূপান্তরের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।

চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালি ধানের দোলায় যেন হাজারো কৃষকের জীবনের আশা, পরিশ্রম আর স্বপ্ন মিশে আছে।