৪০ বছর বয়সী রোকেয়া খাতুন বয়স ৪০ হলেও জীবনের বোঝা যেন তার জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে। দুই বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারানোর পর থেকে এক ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
রোকেয়া খাতুনের সংসার একসময় ছিলো হাসি-খুশিতে ভরা। কিন্তু স্বামী হারানোর পর সুখের সেই সংসার যেন তলিয়ে গেছে দারিদ্র্যের অন্ধকারে। কোনো মতো থাকার জায়গা হলেও কিন্তু নেই খাবারের নিশ্চয়তা। যেদিন কেউ সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়, সেদিন সন্তানদের মুখে এক মুঠো খাবার ওঠে। না হলে একবেলা না খেয়েই কাটাতে হয় পুরো দিন।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পূর্ণিমাগাতি ইউনিয়নের বাবনঘিয়ালা গ্রামের মৃত মহুর আলীর স্ত্রী রোকেয়া খাতুন। তার ৫ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়ে মীম খাতুন। বাবার জীবিত থাকাকালে প্রতিদিন দুধ কিনে খাওয়ানো হতো, কিন্তু এখন অভাবের তাড়নায় সেই দুধটুকুও জোটে না তার ভাগ্যে।
অন্যদিকে বড় মেয়ে মারুফা খাতুন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আর ছেলে রাকিবুল ইসলাম পড়াশোনা করছে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায়। কিন্তু দারিদ্র্যের কষাঘাতে তাদের শিক্ষাজীবন প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে। খাতা-কলম কেনার টাকাটুকু জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হয় রোকেয়াকে। সন্তানদের ছোট ছোট চাওয়া পূরণ করতে না পারার কষ্ট যেন প্রতিটি মুহূর্তে তাকে ভেঙে দিচ্ছে।
রোকেয়ার সংসার চালানোর মতো কোনো নির্দিষ্ট আয়ের উৎস নেই। মাঝে মাঝে কেউ কিছু দিলে সেটুকু দিয়েই কোনোভাবে দিন চলে যায়। কিন্তু প্রতিনিয়ত অভাবের এই ঘূর্ণিপাকে দিন দিন অনিশ্চিত হয়ে উঠছে রোকেয়া ও তার চার সন্তানের জীবন।
এমন হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির কথা জেনে ছুটে আসেন সমাজসেবক মামুন বিশ্বাস। তিনি রোকেয়ার অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সরকারি সহায়তা ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রোকেয়ার আকাঙ্ক্ষা খুবই সাধারণ একটি গরু কিনে সংসারের চাকা সচল করা এবং সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সামান্য সহায়তা।
সবাই যদি রোকেয়া খাতুনের পাশে দাঁড়ায়, হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এই পরিবারটি; হাসি ফুটবে চার সন্তানের মুখে। আসুন, আমরা সবাই মিলে রোকেয়া খাতুনের পাশে দাঁড়াই তাহলেই হয়তো তার সন্তানদের মুখে ফিরিয়ে আনতে পারবো সেই হারিয়ে যাওয়া হাসি।
মতামত