সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ওয়ান এক্সবেট ও স্টার সেভেন্টি ফাইভসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটে আসক্ত হয়ে পড়েছে শিক্ষক কর্মচারী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ। জুয়ার ‘ভার্চুয়াল বিষ’ ছড়িয়ে পড়ছে শ্রমজীবী মানুষের মাঝেও। সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে।
জুয়ার নেশা অশান্তি-কলহের পাশাপাশি অনেক পরিবারকে বিপন্ন করে তুলছে। তবে অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ হলেও এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আশানুরূপ নেই। ফলে ঝুটঝামেলা ছাড়াই তরুণরা বাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসেই জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে তাড়াশ উপজেলাজুড়ে অনলাইন জুয়া ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এতে আসক্ত হচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তাড়াশ পৌর শহর থেকে শুরু করে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে এ জুয়া বিস্তার লাভ করেছে। সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা ও অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পর নেশায় পড়ে যাচ্ছেন। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,ওয়ান এক্সবেড ও স্টার সেভেন্টি ফাইভ নামে একটি জুয়ার সাইট তাড়াশ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। এসব মানুষেরা ওয়ান এক্সবেট ও স্টার সেভেন্টি ফাইভসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটে নিয়মিত জুয়া খেলে। আর এসব নিয়ন্ত্রণ করা হয় বিভিন্ন এলাকার এজেন্টের মাধ্যমে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনলাইন জুয়ায় সর্বস্বান্ত একজন বলেন, তাড়াশে এক ক্যাসিনো সম্রাট বসে এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি তার লোকদের গ্রেফতার ঠেকাতে ‘স্টার সেভেন্টি ফাইভ’ নামে একটি নতুন সাইট বানিয়েছেন। যা চালাতে কোন লোক লাগে না, অটোমেটিক নিয়ন্ত্রণ হয়।
তিনি আরও বলেন, জুয়ার ‘ভার্চুয়াল বিষ’ তাড়াশ ওই ক্যাসিনো সম্রাটেই ছড়িয়েছেন। সেই ক্যাসিনো সম্রাট কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে এ মুহূর্তে আমি তার নাম বলতে পারব না।
এ বিষয়ে তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, অপরাধী যতই চালাক আর নতুন কৌশল অবলম্বন করুক না কেন অনলাইনে জুয়া বন্ধে তাড়াশ থানা-পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মতামত