বিএনপি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি): প্রতিষ্ঠা, যাত্রাপথ ও আগামীর প্রত্যাশা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি): প্রতিষ্ঠা, যাত্রাপথ ও আগামীর প্রত্যাশা

প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:০৪




বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নাম। ১৯৭৫-পরবর্তী অস্থির রাজনৈতিক সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী চেতনা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণা সামনে এনে দেশকে দিয়েছিলেন নতুন দিকনির্দেশনা। ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—যা দ্রুতই জনগণের অধিকার, স্বাধীন অর্থনীতি ও জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রতীক হয়ে ওঠে।

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও যাত্রাপথ

শুরু থেকেই বিএনপির পথচলা ছিল গণমানুষের শক্তিকে সামনে রেখে। ’৮০-এর দশকে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৯০-এর গণআন্দোলন কিংবা বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দলটির অবদান অনস্বীকার্য। প্রতিবারই বিএনপি প্রমাণ করেছে—এটি দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী একটি শক্তি।

ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

বিএনপির অবদানকে তিনটি দিক থেকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা যায়—

অর্থনৈতিক সংস্কার: মুক্তবাজার অর্থনীতি, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও প্রবাসী আয়ের পথ উন্মুক্ত করার মাধ্যমে বিএনপি দেশের অর্থনীতিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্থাপন করেছে।

গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি: সংসদীয় চর্চা, বিরোধী দলের অধিকার ও নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে বিএনপি রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

সামাজিক প্রভাব: শিক্ষা বিস্তার, নারীর অংশগ্রহণ ও সামাজিক উন্নয়নে দলটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।


নেতৃত্বের উত্তরাধিকার

শহীদ জিয়ার রেখে যাওয়া আদর্শ ধারণ করে বিএনপির নেতৃত্বে আসেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রীই নন, বরং নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক। রাজনৈতিক কারাবরণ, অসুস্থতা ও বিভীষিকাময় চাপ সত্ত্বেও তার অটুট সাহসিকতা আজও কর্মী-সমর্থকদের অনুপ্রেরণা জোগায়।

তারেক রহমান: নতুন আশার প্রতীক

আজকের প্রজন্মের কাছে তারেক রহমান এক নতুন অধ্যায়ের নাম। প্রবাসে থেকেও দলের পুনর্গঠন, আধুনিক কৌশল প্রণয়ন এবং ত্যাগী নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ভবিষ্যতের নেতৃত্ব হিসেবে। তার লক্ষ্য কেবল ক্ষমতায় ফেরা নয়, বরং একটি সুশাসিত, উন্নত ও স্বপ্নময় বাংলাদেশ গড়া।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তাৎপর্য

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুধু একটি রাজনৈতিক দলের জন্মদিন নয়; বরং স্বাধীনতার চেতনায় গণমানুষের অধিকার রক্ষার নতুন শপথ নেওয়ার দিন। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়—গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদী চেতনা ও জনগণের অধিকার রক্ষার লড়াই কখনো থেমে থাকে না।

এক নিঃশব্দ যোদ্ধার কণ্ঠে

আমি কোনো পদ-পদবি প্রত্যাশী নই। আমি একজন নিঃশব্দ কর্মী—যিনি আলোচনার কেন্দ্রে আসেন না, কিন্তু বিশ্বাস করেন জাতীয়তাবাদী চেতনায়। ইতিহাসের ভাঁজে ভাঁজে, বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় আমি খুঁজে নিয়েছি এক মহানায়ককে—শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে।
তার আদর্শেই আমার প্রেরণা, তার নামেই আমার স্বপ্ন।

বাংলাদেশের নামে, ভবিষ্যতের নামে, আগামীর নামে আমি উচ্চারণ করি—

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
লেখক : মাহিন মেহেরাব অনিক
আইনজীবি,
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ)
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর,
বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, আদালত-১, বরগুনা।