বিশেষ

নড়াইলে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দিরে ধর্মীয় আচার পালনে সম্প্রীতির বন্ধন

নড়াইলে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দিরে ধর্মীয় আচার পালনে সম্প্রীতির বন্ধন

প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ৯:৫০

নড়াইলের মহিষখোলা এলাকায় এক অনন্য সম্প্রীতির দৃশ্য বিরাজ করছে। পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের এই এলাকায় একপাশে মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করছেন, অপরপাশে মন্দিরে চলছে শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রায় ৪৫ বছর ধরে এভাবেই ধর্মীয় কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পালিত হয়ে আসছে, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৮১ সালে মহিষখোলা এলাকায় পুরাতন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। কিছুদিন পরেই পাশেই মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়। তখন থেকেই এখানে নিয়মিত দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এ বছর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে, যা চলবে ২ অক্টোবর পর্যন্ত। জেলায় মোট ৫২৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ২৩৯টি, লোহাগড়া উপজেলায় ১৪৪টি এবং কালীায় ১৪১টি মণ্ডপ রয়েছে।

মহিষখোলা পূজা মণ্ডপে আগত কলেজছাত্রী অনিতা বিশ্বাস বলেন, নড়াইলের মানুষ সবসময় অন্যের ধর্মকে সম্মান করে। একই জায়গায় নামাজ আর পূজা হওয়া সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

মসজিদের মুসল্লি রফিকুল ইসলাম জানান, নামাজের সময় পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ থাকে। নামাজ শেষে আবার শুরু হয়। এতে কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নৃপেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, আমরা মুসলমানরা নামাজ আদায় করি, পাশেই পূজা হয়। কোনোদিন কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, আশা করি আর হবে না।

পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভংকর সরকার টুপাল বলেন, আমরা ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। প্রায় ৪৫ বছর ধরে এখানে পূজা হচ্ছে। কখনো মনোমালিন্য হয়নি। সবাই মিলেমিশে থাকছি।

মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা এনামুল হক বলেন, আমরা আমাদের ধর্ম পালন করি, তারা তাদেরটা পালন করে। ইসলাম কখনো অন্য ধর্মকে অবমূল্যায়ন করতে শেখায় না।

নড়াইলের মহিষখোলা এলাকার এই সহাবস্থান প্রমাণ করে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সমাজে প্রকৃত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।