সারাদেশ

কুড়িগ্রামে সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার প্রতারণা

কুড়িগ্রামে সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার প্রতারণা

প্রকাশিত : ৫ অক্টোবর ২০২৫, রাত ৯:৪৪

বাবা, মুই ভিক্ষা করি খাং। মাটি কাটার কাম করি সারা জীবনের জমা সাড়ে ছয় লাখ টাকা সমিতিত থুইছিলাম। এখন শুনি টেকা নাই! মুইতো পাগল হইয়া যাম।— কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রতারিত ষাটোর্ধ্ব ছকিনা বেগম।


কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘বেসরকারি দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতি’ প্রায় সহস্রাধিক সদস্যের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


নিজেদের গচ্ছিত অর্থ ফেরত না পেয়ে শনিবার দুপুরে প্রতারিত সদস্যরা জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।


জানা যায়, সংগঠনটি ২০০৭ সালের জুনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে একই বছর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পায়। শুরুতে সদস্যদের উচ্চ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমিতিটি জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ধীরে ধীরে সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করে সমিতির কিছু কর্মকর্তা গা–ঢাকা দেন।


চলতি বছর থেকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সদস্যরা টাকা ফেরত চাইলে সমিতির কর্মকর্তারা নানা টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন খড়খড়িয়া গ্রামের রিপন মিয়া (২ লাখ ৩০ হাজার টাকা), সবুজপাড়া গ্রামের জয়ন্ত রায় (১ লাখ ২২ হাজার), সরকারপাড়া এলাকার এরশাদুল হক (৮০ হাজার), সাতঘড়িপাড়া এলাকার সুফিয়া বেওয়া (১ লাখ ২৮ হাজার), জেলেখা বেওয়া (১ লাখ ৪৮ হাজার), কসভান বেওয়া (৬০ হাজার), মিম আক্তার (৩৬ হাজার ৫০০ টাকা)সহ আরও অনেকে।


দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক নুর আলম জানান,

পরিচালক আনিসুর রহমান আনিস ও মিল্টন মিয়া ১৭ জন কর্মচারীর অর্থ উত্তোলনের কাগজপত্র নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। ফলে এখন আমরা হিসাব দিতে পারছি না। তবে সাতটি জমির দলিল মূলে দিয়ে ৯৫ লাখ টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছে।


সমিতির পরিচালক (ঋণ) আনিসুর রহমান আনিসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।